আধুনিক পাকিস্তান গড়ার জনক, প্রফেসর আতাউর রহমান

পাকিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ রসায়নবিদ হলেন প্রফেসর ডঃ আতা–উর–রহমান।
একজন বৈজ্ঞানিক হওয়ার পাশাপাশি তিনি পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিও ছিলেন ৬ বছর। একাধারে মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি দেশের এবং দশের স্বার্থে তাঁর করা কাজ পাকিস্তানকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উচ্চতর স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
পাকিস্তানের এই বিজ্ঞানীর শুরুর জীবনঃ
প্রফেসর রহমান জন্মেছিলেন স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতের দিল্লিতে। তাঁর পিতামহ স্যার আব্দুর রহমান সেই সময়ের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন।
দেশভাগের আগে তাঁকে লাহোরের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে বদলি করা হয় এবং তিনি পরিবার নিয়ে সেখানকারই বাসিন্দা হয়ে যান। প্রফেসর রহমান পাকিস্তানেই ছাত্রজীবন শুরু করেন।
করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক হন ১৯৬০ খ্রীষ্টাব্দে। বিশেষভাবে পড়াশোনা শুরু করেন জৈবরসায়ন (Organic Chemistry) নিয়ে।
করাচি থেকে স্কলারশিপ নিয়ে প্রফেসর রহমান চলে যান লন্ডনের কিংস কলেজে। সেখানে প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে তাঁর গবেষণা চালাতে থাকেন।
খুব তাড়াতাড়িই সুফল মেলে গবেষণায় এবং তিনি ডক্টরেট সম্মানে অধ্যূষিত হন।
পাকিস্তান ও কর্মজীবনঃ
ডক্টরেট পাওয়ার প্রায় কুড়ি বছর পরে কেমব্রিজ তাঁকে Sc.D দিয়ে ভূষিত করে। তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে সারা বিশ্ব থেকে বহু সম্মান, পুরষ্কার এবং ডিগ্রী লাভ করেছেন ডঃ রহমান, যার দীর্ঘ তালিকা বলে শেষ করা যাবেনা।
গবেষণামূলক কাজের বাইরে শিক্ষার প্রসারে করা কাজও আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁকে খ্যাতি এনে দিয়েছে।
পাকিস্তানের উচ্চশিক্ষা পর্ষদের (HEC) উন্নতির পিছনে ডঃ রহমানের প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য।
জার্মানীর উল্ফগ্যাং ভয়েলতার বিশ্ববিদ্যালয় এইচইসি–এর উন্নতিকে একটি চমকপ্রদ ঘটনা বলে উল্লেখ করে।
বিশিষ্ট সংবাদ মাধ্যম থমসন–রয়টার্স পাকিস্তানের ছাত্রছাত্রীদের গবেষণামূলক কাজের উন্নতির বিষয়টি নিয়ে একটি নিবন্ধও প্রকাশ করে।
২০০২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রায় ৪০০০ জন ছাত্র পিএইচডি কার্যকমে যোগদান করেন পাকিস্তানে। এর মূল কারণ হিসাবে ডঃ রহমানের প্রচেষ্টাকেই কৃতিত্ব দিতে হয়।
খুব কম সময়ের মধ্যে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে লাইব্রেরি, হাই–স্পিড ইন্টারনেট এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।
পাশাপাশি শিক্ষামূলক কাজে জড়িত কর্মচারীদের বেতন তিনগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
শিক্ষামূলক কাজের জন্য ডঃ রহমানকে জাতিসংঘের তরফ থেকেও স্বীকৃতি লাভ করেন।
অষ্ট্রিয়ার সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মানে ভূষিত করে।
বিজ্ঞানবিষয়ক পত্রিকা নেচার -এ পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিতে ডঃ রহমানের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে।
পাকিস্তান সরকারের তরফ থেকে তাঁকে নিশান–ই–ইমতিয়াজ, হিলাল–ই–ইমতিয়াজ, সিতারা–ই–ইমতিয়াজ ও তমঘা–ই–ইমতিয়াজ সম্মানে ভূষিত করেছে তাঁকে।
৭৮ বছর বয়সি বিজ্ঞানী আজও সমান উদ্যোমে নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।