এবারের ঈদে দূরে থেকেও পাশে আছি সবাই

করোনাভাইরাসের মহামারী কালে ঘরে বসে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে এই দুঃসময়ে সামর্থ্য অনুযায়ী দরিদ্র প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঈদুল ফিতর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সকল ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ এ উৎসবে সমানভাবে সামিল হয়ে থাকেন। ঈদের আনন্দ সকলে ভাগাভাগি করে উপভোগ করেন। কিন্তু এ বছর এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। করোনা নামক এক প্রাণঘাতী ভাইরাস সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ঈদের অপরূপ পরিবেশ
সোমবার সকলে মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। নামাজে নভেল করোনাভাইরাস থেকে বিশের মানুষের মুক্তি কামনা করছে মানুষ। সরকার থেকে ঈদগাহ বা খোলা ময়দানে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করা হয়। তাই দেশের মসজিদে মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে কোকাকুলি বা হাতে-হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি।
নিজ নিজ ঘরে থেকে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার নির্দেশনা থাকলেও এদিন থেমে ছিল না ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়। কারণ দুনিয়া তো এখন হাতের মুঠোয়। কাছের কিংবা দূরের, দেশে অথবা বিদেশের যে যেখানেই আছে সেখান থেকেই ভার্চ্যুয়াল জগতে অবিরাম চলছে ঈদের শুভেচ্ছা। মোবাইল ফোনে, ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে, ভাইভার কিংবা ইউটিউবে প্রিয়জনকে ঈদের আনন্দের ভাগ দিতে সরগরম ছিল পুরো ভার্চ্যুয়ার দুনিয়া। করোনায় শারীরিক দুরত্ব বজায় থাকলেও আত্মীক বন্ধনের এ যেন এক অনন্য নজির এবার ঈদে। কোথাও বা আবার ভিডিও কনফারেন্সে চলছে আড্ডা। দূরে থেকেই কাছে ছিল সবাই।
অনলাইনেই সংযোগ
আধুনিক প্রযুক্তির এতোসব সুযোগ সুবিধার পরে এবারের ঈদ যেন অনেকটাই বিবর্ণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল একটি জনগোষ্ঠী সাম্প্রতিক ঘুর্ণিঝড় আমফানে এখনো বিপর্যস্থ। বহু পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়েছে। অনেকের ঘর থাকলেও সেগুলো পানিবন্দি। আমফানের ক্ষতির বাইরে বহু মানুষ আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন। ঝুলে পড়া অর্থনীতিতে নিম্ন আয়ের মানুষদের অনেক ঘরে হয়তো চুলা জ্বালানোর মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেকের জন্যই এবার তাই দু:সময়ের ঈদ।
ইন্টারনেট জগতে তাই অনেকেই এই সামাজিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে স্রেফ আনন্দে গা না ভাসিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। হতাশার মাঝেও আছে আশার আলো অনেকে লিখেছেন। আশাবাদী একাংশ লিখেছে, ‘সময় এক রকম যায় না, দিন পাল্টাবে। সুদিন আসবেই’। সবার সাথে আমরাও অপেক্ষায় থাকলাম। কেটে যাবে সংকট, আবার হাসবো আমরা প্রাণের উচ্ছ্বাসে। মিলিত হবো ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে। ঈদ মোবারক।