জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে না তো?

ইসলামে ইমানদার ও জিম্মেদার মুসলমান ভাই বোনেদের উদ্দেশ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভারী সুন্দর একটি বার্তা রয়েছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাঁর রাসূল হযরত মুহম্মদ
সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ দিয়ে আমাদের সমস্ত সংশয় ও সন্দেহ দূর করিয়েছেন।
সেবক ও আল্লাহর দূত যখন সাধারণ মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে , ‘ ইসলাম ধর্ম আসলে উপদেশ।‘
সাধারণ মানুষ প্রশ্ন করেছে, ‘ হে আল্লাহর দূত, হে নবী, কার উদ্দেশ্যে ও কোথায় আল্লাহ এই উপদেশ নি’ইয়ামত করেছেন?’
নবীজি তাতে উত্তর দিয়েছেন, ‘ আল্লাহ পবিত্র কুর-আনে, তাঁর দূতের মুখ থেকে ইসলামের ধর্মগুরু ও নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষের প্রতি এই উপদেশ নি’ইয়ামত করেছেন।‘
সুতরাং, সহি মুসলমান ভাই বোনের জীবনের প্রতি পদক্ষেপে আল্লাহর উপদেশ মেনে চলা উচিৎ। ইবলিশ আমাদের নানাভাবে প্রলোভিত করার জন্য অপেক্ষা করে, সেই প্রলোভন থেকে সরে আসতে হবে। স্বয়ং আল্লাহর দূত নবীজি বলেছেন, ‘ প্রকৃত বিশ্বাসী মুসলমান সেই যে নিজের ভাইকে নিজের মতোই ভালবাসে ও সাহায্য করতে সর্বদা তৎপর থাকে।‘
এইক্ষেত্রেই বলা যায়, যে মুসলমান ভাই বোনেরা অনেকসময় কিছু কিছু ডাক্তারি ও শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। আবার কোনও কোনও শারীরিক অভ্যাসে ভুলবশত শরিয়া বিরোধী কাজ করে ফেলে। ইমানদার মুসলমান হিসাবে আমাদের সহ–মুসলমানদের এই অভ্যাস আমাদের তুল ধরতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে যা ইসলাম বিরোধী তাতে অংশগ্রহণ করা নাপাক। পবিত্র কুর–আনে রয়েছে, ‘আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।‘ [কুর–আন ২:১৯৫]
এখানে মূলত যে শরিয়াবিরোধী ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে তা জন্মনিয়ন্ত্রণ। অবশ্যই পরিবার পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার, কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা করতে গিয়ে অনর্থক জন্মনিয়ন্ত্রণের দ্বারস্থ হলে আল্লাহকে ক্ষুব্ধ করা হয়। আল্লাহ কখনোই চান না যে তাঁর সেবক ও সমর্থকরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে উঠুক, জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলোর এই ঋণাত্মক প্রভাব রয়েছে।
জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ
অনেকেই গর্ভাবস্থা আটকানোর জন্য নানারকম কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল গ্রহণ করে থাকেন। এই ধরনের ওষুধ শিরার দেওয়ালে ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া থ্রম্বোসিস, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, মায়োকর্ডিয়ায় সমস্যা্ রক্তবাহে সমস্যা, হাইপারটেনশন ইত্যাদির সম্মুখীন হতে হয়। মেটাবলিজম ও হজমে সমস্যা ঘটিয়ে প্রভূত ওজন বৃদ্ধির সমস্যাও দেখা যায় কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল গ্রহণে।
এছাড়া বমিভাব, বুক ও স্তনে ব্যথা, লজ্জাস্থানে শুষ্কভাব, ঋতুস্রাবে সমস্যা প্রভৃতি দেখা যায়।
মাসিক হরমোন ইঞ্জেকশন ও লুপ(ইন্ট্রা ইউটেরাইন ডিভাইস)
কন্ট্রাসেপ্টিভ পিলের থেকেও ক্ষতি করে মাসিক হরমোন ইঞ্জেকশন। এই ধরনের ইঞ্জেকশন মেনোরিজিয়া অর্থাৎ অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, আমেনোরিয়া অর্থাৎ খুব কম ঋতুস্রাব, স্থূলত্ব, মেটাবলিজমে সমস্যা, নানাপ্রকার সংক্রমণ, কোমরে যন্ত্রণা প্রভৃতি দেখা যায়।
এছাড়াও মারাত্মক হল জরায়ুর দেওয়ালে লুপ প্রভূত ক্ষতের সৃষ্টি করে, সেটি ক্রমশ ক্যান্সারের দিকে চলে যেতে পারে। কপার টি খোলার সময় অসম্ভব রক্তপাত হতে পারে। অনেকসময় স্থায়ী বন্ধ্যাত্ব দেখা যায়।
আল্লাহ কখনোই চাইবেন না আমরা তাঁর ভক্তরা সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করে ক্ষতিগ্রস্থ হই, তাই জন্যই এ সমস্ত পদ্ধতি ব্যবহার প্রথম থেকেই শরিয়াবিরোধী।