পাল্টে যাচ্ছে কাজের জায়গা, যে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

২০২০ তে অনেক কিছু পাল্টানোর মতো পাল্টে যাচ্ছে কর্মক্ষেত্রও। করোনা ভাইরাস মানুষের জীবনযাত্রার ধরন যেভাবে বদলে দিয়েছে তাতে কোনো কিছুই আর আগের মতো নেই। যেটুকু আছে এখনও তাও এই ভয়াবহ অতিমারীর শেষ পর্যন্ত থাকবে বলে মনে হয় না। বলাইবাহুল্য যে সবচেয়ে প্রভাবিত হয়েছে যে জায়গাগুলি তার মধ্যে কর্মক্ষেত্র বা অফিস অন্যতম।
বিশেষজ্ঞদের কর্মক্ষেত্রের যে আমূল পরিবর্তন হতে চলেছে তার প্রাথমিক পর্যায় এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
স্বাভাবিকভাবেই শুরুটা হয়েছে টেকজায়েন্ট-এর হাত ধরে।
টুইটার জানিয়ে দিয়েছে তাদের কোনো অফিসই ২০২০-এর শেষ পর্যন্ত খুলছে না।
সিইও জ্যাক ডরসি জানিয়েছেন “এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কর্মীদের স্থায়ীভাবে বাড়ি থেকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে।”
ফেসবুই সিইও মার্ক জুকারবার্গও একই পথে হাঁটছেন, তাঁর কথায় “এই দশকের মধ্যেই প্রায় ৪৫০০০ হাজার কর্মী বাড়ি থেকে কাজ করবে।”
মাইক্রোসফ্ট এবং গুগল এবছরের শেষ পর্যন্ত ওয়র্ক ফ্রম হোম-এর ব্যবস্থা রাখছে।
তবে আশা করা যায় এই দুই কোম্পানীও স্থায়ীভাবে বাড়ি থেকে কাজ করার নোটিস জারি করবে অদূর ভবিষ্যতে।
কীভাবে পাল্টে যাচ্ছে কর্মক্ষেত্রঃ
বিশ্বজুড়ে ওয়র্ক ফ্রম হোমের চাহিদা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় একাধিক প্রশ্নও উঠছে এই প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা নিয়ে।
অনেকে বলছেন বাড়ি থেকে কাজ করলে কর্মীদের মধ্যে কাজ কম করার বা ফাঁকি দেওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।
কিন্তু এয়ারটাস্কার-এর করা একটি সমীক্ষা এই সমস্ত দাবিকে অমূলক প্রমাণ করে উল্টো মতামতই পোষণ করেছে।
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে যে, বাড়ি থেকে কাজ করা একজন কর্মী একজন অফিস কর্মীর থেকে মাসিক ১.৪ দিন সময় বেশি কাজ করে।
অর্থাৎ, তার প্রোডাক্টিভিটি বা উত্পাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ বছরের শেষে ১৭টি নতুন কাজের দিন যুক্ত করছে কর্মীটি।
এছাড়াও সার্ভে থেকে প্রমাণিত হয় যে অফিস কর্মীর তুলনায় বেশি সময় নষ্ট করে।
যেসমস্ত অফিস এখনও পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে না তাদের অফিসের গঠন পাল্টাচ্ছে। দুজন কর্মীর চেয়ারের মাঝে প্রায় ৩ থেকে ৪ ফুট দূরত্ব রাখতে হচ্ছে। কার্যত অফিস স্পেসকে বড় করা ছাড়া দ্বিতীয় উপায় নেই।
ঠেলাঠেলি করে অফিস করার দিন এখন অতীত, আমাদের নিজেদের স্বার্থে সচেতন হতে হবে।
বাড়ি থেকে কাজ করার সুবাদে আরও কিছু পরিবর্তন আসতে পারে কর্মক্ষেত্রে। বড় শহরে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে অফিস ভাড়া নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে কোম্পানীগুলো। যারা বাড়ি থেকে অফিসের স্বার্থে বড় শহরে এসেছেন তারা ফিরে যেতে পারেন।
এক্ষেত্রে কর্মীদের বেতন কমানোর সম্ভবনাও আছে কারণ শহর থেকে অন্যত্র (ছোটো শহর বা গ্রাম) চলে গেলে জীবনযাত্রার মান কমে যাবে তার সাথে খরচও কমে যাবে। এভাবেই পাল্টে যাচ্ছে কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড।
রবার্ট ওয়াল্টার্স গ্রুপের ডিরেক্টর স্যাম ওয়াল্টার্সের মতে “রিমোট ওয়র্কের ফলে কাজ ও জীবনের ভারসাম্য (Work Life Balance) অনেকটা স্বাভাবিক স্তরে এসে দাঁড়াবে এবং মানুষ এই ধরনের কাজের প্রতি বেশীরকম ঝুঁকবে” ।