ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র: যে দক্ষতায় আপনি যোগ্য হয়ে উঠবেন

ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র এখনকার থেকে অনেকটা আলাদা হবে, তার ইঙ্গিত এখন থেকেই স্পষ্ট।
হঠাৎ এক ধাক্কায় বেশ খানিকটা পাল্টে গেছে গোটা পৃথিবী তার সাথে পাল্লা রেখে কর্মক্ষেত্রের চাহিদাও পাল্টেছে।
শতাব্দি প্রাচীন অফিসের চাকরী যে ইন্টারনেটের অগ্রগতির সাথে সাথে অস্তিত্ব সংকটে পরে যাবে এটা সকলেই জানত কিন্তু তা যে এতটা অকস্মাৎ হবে সেটা কেউ ভাবেনি।
বাড়িতে থেকে কাজ বা রিমোট ওয়ার্কিং-এর নিজস্ব চাহিদা আছে এবং কর্মীদের সেই অনুযায়ী দক্ষ হতে হবে।
স্বাভাবিক ভাবেই ইন্টারনেট কেন্দ্রিক কাজ হওয়ায় যেকোনো ক্ষেত্রে এবং যেকোনো পদের কাজেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত প্রাথমিক জ্ঞান তো বটেই কিছু ক্ষেত্রে গভীর জ্ঞানেরও প্রয়োজন।
এছাড়াও আরও কিছু যোগ্যতা প্রয়োজন আজকের দিনে সফল কর্মী হওয়ার পিছনে, যেমন:
ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে টেকনোলজি সম্বন্ধে জ্ঞান
আমাদের দৈনন্দিন কাজের প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি নির্ভরতার ছাপ চোখে পড়ছে।
এটা আগেই বলেছি, আজকের দিনে রিমোট ওয়ার্কিং-এ নূন্যতম টেক জ্ঞান চাইই চাই। ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র টেকনোলজির জ্ঞানের চাহিদা আরও বৃদ্ধি করবে।
কম্পিউটারের বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্ট করা, ভিডিও কনফারেন্সিং-এর প্রাথমিক ধারণা গুলো তৈরি করে নেওয়ার পরে নজর দিতে হবে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের উপর।
আজকের দিনে একজন যোগ্য কর্মীর কোডিং/প্রোগ্রামিং, ডেটা লার্নিং, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা থাকলে সে এগিয়ে যাবে অন্যদের থেকে।
এছাড়া মাইক্রোসফ্ট, অ্যাডোবি, গুগল অ্যাপস-এর মতো প্রচলিত অফিস টুলস-এ কাজ করার মতো জ্ঞান থাকা জরুরি ক্ষেত্রে বিশেষে।
বর্তমানে ডেটা সায়েন্স এবং ক্লাউড কম্পিউটিং অ্য়ান্ড সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বাড়ছে।
এই দুই বিষয়ের উপরে বিভিন্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন কোর্স চালু করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি।
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দাবি, ক্লাউড কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি, ডেটা সায়েন্স, ওয়েব টেকনোলজি এবং আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (AI) মধ্যে তিনটি বিষয়ে যাদের সার্টিফিকেট থাকবে তাদের অগ্রাধিকার দেবে কর্মজগত।
কারণ আগে তাঁদের অতিরিক্ত কোনও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হবে না।
শিল্পক্ষেত্রের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কর্মজগতে পা রাখার জন্য প্রযুক্তির যোগ্যতা প্রয়োজন।
সেই বিষয়টির উপরে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন কোর্সের পাঠ্য়সূচি প্রস্তুত হচ্ছে বিশ্বে।
ফলে প্রাধান্য পাচ্ছে মূলগত দক্ষতার পাশাপাশি ভবিষ্যৎমুখী প্রযুক্তিগত বিষয়গুলি।
আজকের দিনে যে কোনও কর্পোরেট সংস্থায় দক্ষতা ও উৎকর্ষতার উপরে ভর করে একজন যোগ্য কর্মী হয়ে উঠতে পারেন।
ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে সমব্যথী হওয়া এবং সচেতনতা
বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কাজ ও কর্মক্ষেত্রজড়িত বিষয়গুলিতে যে পরিবর্তন এসেছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য দলবদ্ধ সফলতার ভাবনা।
শুধুমাত্র মাসিক বেতন যুক্ত চাকরি ছেড়ে বড় কম্পানীগুলো আজ ইসপ-এর মতো প্রক্রিয়াকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
এর প্রধান কারণ হলো, প্রত্যেকটি সংস্থা চাইছে কর্মীরা শুধুমাত্র কর্মী না থেকে সংস্থার একটা অংশ হয়ে দাঁড়াক।
সে যেমন দিনে অফিসে বসে কাজ করছে তেমনই কাজের শেষে বাড়ি গিয়েও তার কাজের কথাটা ভাববে।
কীভাবে নিজেকে আরও উন্নতমানের করা যায় এবং কীভাবে দলবদ্ধ ভাবে উন্নতি করা যায়, এটাই আজকের একজন যোগ্য কর্মী আদর্শ হওয়া উচিত।
ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র কর্মচারীর সচেতনতা দাবী করবে।
কাজ করতে গিয়ে সে যেমন নিজের কথা ভাববে তেমন সহকর্মীর সমস্যাগুলোকেও গুরুত্ব দেবে। এজন্যই প্রয়োজন সমব্যথি হওয়া এবং সামগ্রিক ভাবে সচেতন হওয়া।
ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে নতুন কিছু করার ইচ্ছা
ক্রিয়েটিভিটি অর্থাৎ সৃজনশীলতা, একটা সময় কর্পোরেট জগতে কথাটা গুরুত্বহীন হয়ে থাকলেও আজ আর নেই।
আমাদের কাছে রোবোট আছে, কম্পিউটার আছে এবং আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স নামক প্রযুক্তিও প্রতিদিন উন্নত হচ্ছে, এরা বহু অসম্ভবকে সম্ভব করলেও একটা জিনিস পারেনা; চিন্তা করতে।
একজন মানুষ হিসাবে আপনার কাছে একমাত্র এই ক্ষমতাটা আছে যা যন্ত্রকে হারিয়ে দেবে।
তাই এই মূল্যবান অস্ত্রে শান দিতেই হবে। । আপনার মধ্যে অসংখ্য প্রতিভা আছে, সাহস করে এবং বিশ্বাস নিয়ে নিজের মতো করে কিছু করার চেষ্টা করুন। প্রথমে সফলতা আসবে না, কিন্তু আপনার এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করা আপনাকে অনেক বেশি ভরসাযোগ্য, প্রতিভাবান এবং দক্ষ কর্মীতে পরিণত করবে।