মহাকাশ পর্যটক হিসাবে বিশ্বের প্রথম মহিলা ইনিই

স্বপ্ন বরাবরই বিচিত্র। স্বপ্ন দেখে পূরন করতে খুব কম মানুষই পারেন। প্রচণ্ড পরিশ্রম তাদের সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দেয়। তবে সফল ব্যক্তি বলতে মানুষ শুধু পুরুষের নামই মনে করেন।
কিন্তু পুরুষ ও যেমন অসম্ভবকে সম্ভবের তালিকায় এনেছে সেরকম নারীরা অসাধ্য সাধন করেছে।
তাহলে কেন নারীদের নাম মনে করা হয়না? তাদেরও মনে রাখা উচিত কেউ কারোর থেকে কোনো অংশে কম না।
নারীরাও স্বপ্নগুলোকে অনেক কষ্ট করে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছে, সেই সব কাহিনীই আমাদের অনুপ্রেরনা জোগায় এবং আগামীর নারীদের এগিয়ে দেয়।
শুধু সেটাই না, কল্পনাকে বাস্তবের পথে পরিচালিত করার পথ সূচনা করে।
মারটিন লুথার কিং কিংবা নীল আর্মস্ট্রং এর কথা লোক মুখে ঘোরে সেরকমই মেয়েদের দৃষ্টান্ত ও তুলে ধরতে হবে।
মহাকাশ যাত্রায় প্রথম নারীঃ
আনোসেহ আনসারী সেরকমই একজন নারী। তিনি প্রথম মহিলা মহাকাশ পর্যটক, শুধু কি তাই! তিনিই প্রথম ইরানীয় মহিলা যিনি এই অসম্ভবকে সম্ভবের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। যুবসমাজের প্রত্যেক যুবক যুবতী যাতে তাকে দৃষ্টান্ত স্বরূপ পেয়ে জীবনের এগিয়ে যেতে পারে, তার জন্যই এনার সফলতাকে স্মরন করতে হবে।
অদূর ভবিষ্যতে এদেরকে ঘিরেই আবার নতুন কেউ জন্ম নেবে এই দুঃসাহসিক কর্মকে সফল করতে।
আঠারো বছরে বয়সে আনসারি পাড়ি দেন আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য।
সেখানকার জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করেন ইলেকট্রনিকস্ এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং–এ। এরপরে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং–এ মাস্টার্স করে পড়াশোনার গন্ডি শেষ করেন।
১৯৯৩ সালে আনসারি ও তাঁর স্বামী তাঁদের প্রথম কোম্পানী শুরু করেন যা পরে সোনাস নেটওয়ার্ককে বিক্রি করে দেন।
এরপরে ২০০২ সালে আনোসেহ মহাকাশ সম্বন্ধে বিশেষ কৌতুহলী হয়ে ওঠেন।
ওই একই সময়ে আনোসেহ ও তাঁর পরিবার এক্স প্রাইজ ফাউন্ডেশনকে দশ মিলিয়ন ডলার দান করেন।
বিশ্বের প্রথম মহিলা মহাকাশ পর্যটক ২০০৬ সালে তাঁর অভিযান করেছিলেন।
যদিও তাঁর মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ বেশ আকস্মিক ছিল কারণ এক জাপানি ব্যবসায়ী অসুস্থতার কারণে যেতে না পারায় স্পেসক্র্যাফ্টে তাঁর জায়গা হয়।
২০০৬–এর শুরুর দিকেই আনুসেহ পাড়ি দেন রাশিয়ায় ট্রেনিং–এর উদ্দেশ্যে। অবশেষে সম্পূর্ণ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত আনুসেহ ও তাঁর দল ১৮ই সেপ্টেম্বর পাড়ি দেন মহাকাশের উদ্দেশ্যে। আনুসেহ পরে সাক্ষাতকারে বলেন তিনি সারা পৃথিবীর সমস্ত মেয়েদের সামনে এরকম অনেক সুযোগ তুলে ধরতে চান যা সাধারণত মেয়েরা পায়না। তাঁর মতে মেয়েদেরও ছেলেদের সমান সুযোগ পাওয়া উচিত এবং স্বপ্ন দেখার অধিকার প্রয়োজন।