সূর্য শীতল হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ, এ কোন বিপদ?

সারা পৃথিবী আজ লকডাউন হয়ে আছে করনা ভাইরাসের কারনে। মানুষ তার স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেনা। এবং সবাই প্রার্থনা করছে, আশা করছে যাতে খুব দ্রুতই কোন ইতিবাচক খবর আমরা পেতে পারি। ফিরে যেতে পারি আমাদের কর্মস্থলে, কাছে পেতে পারি আমাদের আপনজনদের, সারা পৃথিবী আবার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে।
কিন্তু এই ভাইরাসের মহামারীর মধ্যেই আমরা আরেকটি দুঃসংবাদ পেলাম। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা আমাদের এই দুঃসংবাদটি দিয়েছে। নাসার বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে লকডাউনে চলে গেছে সূর্য। আর এ কারণে সূর্য শীতল হয়ে আসছে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন সূর্য শীতল হয়ে আসার কারণে বিশ্বের তাপমাত্রা কমে যাবে, সারা পৃথিবী আরো শীতল হয়ে উঠবে। এছাড়াও সারা পৃথিবী জুড়ে ভূমিকম্প ও দুর্ভিক্ষের মত নানা ধরনের ভয়ঙ্কর সব দুর্যোগ দেখা দিতে পারে। যদি তাই হয়ে থাকে তবে এটা বলা যায় যে, পৃথিবী এক সংকটময় মুহূর্তের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ।
সূর্য হচ্ছে শীতলঃ
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সূর্য বর্তমানে ‘সোলার মিনিমাম’ পরিস্থিতিতে রয়েছে। এর ফলে পৃথিবীতে সূর্য সব সময় যে স্বাভাবিক তাপমাত্রা সরবরাহ করতো তার থেকে কম তাপমাত্রা পৃথিবীতে সরবরাহ করছে। অর্থাৎ পৃথিবীতে সূর্যের আলো নাটকীয় ভাবে পরম পাওয়া যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত গভীর। সানস্পট গণনাগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে এটি বিগত শতাব্দীর সবচেয়ে গভীরতম অবস্থানে রয়েছে। সূর্যের চৌম্বকীয় শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর মানে হলো সৌরজগতে অতিরিক্ত মহাজাগতিক শক্তির প্রবেশের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
বিশ্বখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. টনি ফিলিপস বলেন, বিশ্ববাসী সামনে এমন গভীরতম এক সময়ের ভেতরে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যেসময়ে সূর্যের আলো কার্যত অদৃশ্য হয়ে যাবে। সূর্যের সোলার মিনিমাম চলছে। এটি অত্যন্ত গভীর। সানস্পট গণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে এটি বিগত শতাব্দীর সবচেয়ে গভীরতম অবস্থানে রয়েছে। সূর্যের চৌম্বকীয় শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর মানে হলো সৌরজগতে অতিরিক্ত মহাজাগতিক শক্তির প্রবেশের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেন জোতির্বিজ্ঞানী টনি ফিলিপস আরো বলেন, সৌরজগতে অতিরিক্ত মহাজাগতিক রশ্মি প্রবেশ করলে নভোচারী ও মেরুঅঞ্চলের জন্য তা হবে বিপজ্জনক। এছাড়া এটি পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলের বৈদ্যুতিক-রসায়নকে প্রভাবিত করে এবং বজ্রপাতও বাড়াবে।
টনি ফিলিপস আরও বলেন, সৌরজগতে অতিরিক্ত মহাজাগতিক রশ্মি প্রবেশ করলে নভোচারী ও মেরু-অঞ্চলের জন্য তা হবে বিপজ্জনক। এছাড়া এটি পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলের বৈদ্যুতিক-রসায়নকে প্রভাবিত করে এবং বজ্রপাতও বাড়াবে।
সূর্য নিয়ে বিজ্ঞানীদের বক্তব্যঃ
নাসার বিজ্ঞানীরা আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, সূর্যের এই লকডাউনে যাওয়ার ঘটনায়‘ডাল্টন মিনিমাম’ এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে। ১৭৯০ এবং ১৮৩০ এর মধ্যে সূর্যের মিনিমাম সোলারের কারণে তীব্র শীতের মুখে পড়েছিল পৃথিবী। এর প্রভাব পড়ে প্রকৃতিতে। ফসলের ভয়াবহ ক্ষতি, এর থেকে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ, এবং শক্তিশালী আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটেছিল তখন।
ওই সময়টিতে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাত্র দুটি, তিন সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডুবেছিল পৃথিবী। সারা পৃথিবীর উৎপাদন ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। কারণ আমরা জানি খাদ্য উৎপাদনের সাথে সূর্যের আলো এবং এর থেকে সৃষ্ট তাপমাত্রা সরাসরি জড়িত। যেহেতু সূর্যের আলো এবং এর থেকে সৃষ্ট তাপমাত্রা তখন কমে গিয়েছিল তাই খাদ্য উৎপাদনে এর প্রভাব সরাসরি পড়েছিল।
১৮১৫ সালের ১০ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার তামবোরা পর্বতশৃঙ্গে দুই হাজার বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত অন্তত ৭১ হাজার মানুষ মারা যায়। পরের বছর ১৮১৬ সালে বিশ্বের অনেক দেশে গ্রীষ্মকালই দেখা যায়নি। এমনকি জুলাইয়ের গরমের দিনও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তখন তুষারপাত হয়। এর ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে পারি ,আমাদেরকে সকল প্রকার বালা মুসিবত থেকে তিনি যেন আমাদের রক্ষা করেন।